Biography of srinivasa ramanujan in bengali style
শ্রীনিবাস রামানুজন এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
আজকের সেরা গণিতজ্ঞও সবিস্ময়ে দেখেন, তার তথাকথিত আবিষ্কৃত যাবতীয় সূত্রই বহু বছর আগে রামানুজন নির্ণয় করে গেছেন। অনেকেই শ্রীনিবাস রামানুজনকে বিশ্বের সর্বকালের সেরা গণিতজ্ঞ বলে মনে করেন। আজকের সেরা গণিতজ্ঞ সবিস্ময়ে দেখেন, তার তথাকথিত ‘আবিষ্কৃত যাবতীয় সূত্রই বহু বছর আগে রামানুজন নির্ণয় করে গেছেন।
অথচ বেঁচে ছিলেন মাত্র ছত্রিশ বছর এবং সেই ছত্রিশটা বছরই কী সংঘাতপূর্ণ ও বর্ণময়!
জন্ম ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দে। এক কাপড়ের দোকানের হতদরিদ্র কর্মচারী শ্ৰীনিবাস আয়েঙ্গারের পুত্র। স্কুলে পড়া হয়তাে সম্ভবই হত না, নেহাৎ বৃত্তি পাওয়ায় তা সম্ভব হয়।
একেবারে শিশু বয়স থেকে গণিতের প্রতি অপ্রতিরােধ্য আকর্ষণ। স্কুলে পড়বার সময় তার হাতে আসে গণিতের একখানা নামকরা বই ‘A synopsis of Elementary Results well-heeled Pure and Applied Mathematics.' বইটির সমস্ত কঠিন সমস্যার সমাধান করে ফেলেন শ্রীনিবাস। অঙ্কই হয়ে দাঁড়াল এমন ধ্যান-জ্ঞান যে কলেজে উঠে অন্য বিষয়ের প্রতি তিনি আদৌ মনােযােগ দিলেন না। ফলে কলেজের কোনও পরীক্ষাতেই তিনি পাস করতে পারেননি।
১৯১১ খৃষ্টাব্দে Indian Mathematical Society'-এর মুখপত্রে শ্রীনিবাস একটি সারগর্ভ নিবন্ধ লেখেন—'Some properties of Bernoulli's numbers.'
শ্রীনিবাস রামানুজের জীবনে তখন অঙ্ক ছাড়া আর কিছুই যেন নেই। নিত্যনতুন ফর্মুলা উদ্ভাবন করে চলেছেন। দেশ-বিদেশের গণিতজ্ঞদের কাছে। নিজের সেই সমস্ত আবিষ্কারের কথা জানাতে লাগলেন। কিন্তু কেউই পাত্তা দিচ্ছেন না তাকে। অবশেষে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রধান অধ্যাপক মিঃ জি.
এইচ. হার্ডি ও তাঁর সহকারী মিঃ লিটলউড চমকে উঠলেন শ্রীনিবাস রামানুজের চিঠি ও একগাদা অঙ্কের অভিনব ফর্মুলার গভীরতা তথা কার্যকারিতা দেখে।
এই হার্ডিরই ঐকান্তিক চেষ্টায় পর্বতপ্রমাণ পারিবারিক ও সামাজিক বাধা অতিক্রম করে শ্রীনিবাস ১৯১৪ খৃষ্টাব্দের ১৭ই মার্চ ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। তাঁর যাবতীয় ব্যয় বহন করেছিল মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ অবধি শ্রীনিবাস কেমব্রিজে ছিলেন। এই সাড়ে চার বছরে গণিত নিয়ে তিনি যা কাজ করে গেছেন, বিশ্বের আর কোনও গণিতজ্ঞের পক্ষে এর আগে বা পরে সম্ভবপর হয়নি। তিনি ইংল্যান্ডে রয়েল সােসাইটির সদস্য নির্বাচিত হলেন। তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। কিন্তু ভেঙে পড়ছে শরীর। যক্ষায় আক্রান্ত তিনি তখন।
১৯১৯ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাসে অসুস্থ রামানুজন স্বদেশে ফিরে এলেন। ১৯২০ খৃষ্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল চিকিৎসকদের সমস্ত প্রয়াসকে ব্যর্থ করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই গণিতজ্ঞ তরুণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।